প্রকাশনার ১৫ বছর

রেজি নং: চ/৫৭৫

১লা জুলাই, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
১৭ই আষাঢ়, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
৬ই মহর্‌রম, ১৪৪৭ হিজরি

লাশ পোড়ানোর ‘নির্দেশদাতা’ এএসপি কাফী পাসপোর্ট পান এক দিনেই!

editor
প্রকাশিত অক্টোবর ৪, ২০২৪, ০১:১৬ পূর্বাহ্ণ

 

প্রজন্ম ডেস্ক:

 

ঢাকা জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস) মো. আবদুল্লাহিল কাফী গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার সরকার পতনের আগে সাভারে ছাত্র-জনতার আন্দোলনে সহিংসতায় নিহতদের লাশ পোড়ানোর ঘটনার মামলার আসামি। অভিযোগে তাঁকে ‘গুম করার উদ্দেশ্যে লাশ পোড়ানোর নির্দেশদাতা’ হিসেবে দেখানো হয়েছে।

সরকার পতনের পর সরকারি পাসপোর্টধারী এএসপি কাফী মিথ্যা তথ্য দিয়ে ও পাসপোর্ট অফিসের কর্মকর্তাদের ‘ম্যানেজ করে’ এক দিনেই সাধারণ পাসপোর্ট সংগ্রহ করেন। সেই পাসপোর্ট ব্যবহার করে দেশ ছাড়ার চেষ্টাকালে গত ২ সেপ্টেম্বর তাকে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে আটক করে গোয়েন্দা পুলিশ। পরে চাকরি থেকে সাময়িক বরখাস্ত করে তাঁকে কারাগারে পাঠায় পুলিশ।

বিসিএস পুলিশ ক্যাডারের ২৯ ব্যাচের কর্মকর্তা কাফী সরকারি পাসপোর্ট ব্যবহার করতেন। সাভারে লাশ পুড়িয়ে ফেলার ঘটনায় জড়িত হিসেবে নাম এলে দেশ ছাড়ার পরিকল্পনা করেন তিনি।

 

সংশ্লিষ্ট সূত্রমতে, পাসপোর্ট অধিদপ্তরের ঢাকা বিভাগের উপপরিচালক মো. ইসমাইল হোসেন কাফীকে পাসপোর্ট পেতে সহযোগিতা করেছেন। কাফীকে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের স্বাস্থ্য বিভাগের ‘স্প্রেম্যান সুপারভাইজার’ পদবির কাগজপত্র তৈরি করে দেন তিনি।

সেই পদবি থেকে কাফীকে অব্যাহতি নেওয়ার অফিস আদেশ নকল করে সাধারণ পাসপোর্টের জন্য আগারগাঁও পাসপোর্ট অফিসে আবেদন করেন এই পুলিশ কর্মকর্তা। সেই অব্যাহতির নথি গণমাধ্যমের হাতে আছে। সেটি ‘নকল করা হয়েছে’ বলে উত্তর সিটি করপোরেশনরে এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা নিশ্চিত করেন।

সংশ্লিষ্ট একজন কর্মকর্তা বলেন, ‘পুলিশ কর্মকর্তা কাফীকে গোপনীয়তা ও দ্রুততার সঙ্গে পাসপোর্ট পেতে সহায়তা করেছেন তাঁর বন্ধু ঢাকা বিভাগীয় পাসপোর্ট অফিসের উপপরিচালক মো. ইসমাইল হোসেন। কাফীর আবেদনটি ইসমাইল নিজে গ্রহণ না করে একজন ডিএডিকে দিয়ে জমা করান। আবেদনটি সুপার এক্সপ্রেস হিসেবে জমা হয় গত ১৫ আগস্ট। এর এক দিন পরই অর্থাৎ ১৬ আগস্ট ইসমাইল হোসেন কাফীকে পাসপোর্ট (A 08757046) দেওয়ার ব্যবস্থা করেন। কাফীর সরকারি পাসপোর্ট নম্বর OC 6099060।

 

৫ আগস্টের সরকার পতনের পর পুরো আত্মগোপনে চলে যান কাফী। ১৫ আগস্ট সাধারণ পাসপোর্ট পাওয়ার পর ২ সেপ্টেম্বর বিমানবন্দর দিয়ে পালানোর সময় আটক হন তিনি।

পাসপোর্ট অধিদপ্তরের একজন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ‘গোপনীয়তার সঙ্গে পুলিশ অফিসার কাফীকে সাধারণ পাসপোর্টের ব্যবস্থা করে দেওয়া হয়েছে। একজন ই-পাসপোর্টধারীর একাধিক পাসপোর্ট রাখারও কোনো সুযোগ নেই। তবে কাফীকে সাধারণ পাসপোর্ট দেওয়ার ক্ষেত্রে ভাঙা হয়েছে সব নিয়মকানুন।’

অভিযোগের বিষয়ে বক্তব্য নিতে পাসপোর্ট অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক সেলিনা বানু, ঢাকা বিভাগীয় পাসপোর্ট অফিসের পরিচালক সাইদুর রহমান এবং অভিযুক্ত কর্মকর্তা ইসমাইল হোসেনকে দিনভর ফোন করা হলেও তাঁরা কেউ ফোন রিসিভ করেননি।

ইসমাইল হোসেনের হোয়াটসঅ্যাপ নম্বরে এসএমএস করা হলেও সাড়া পাওয়া যায়নি।

 

সংবাদটি শেয়ার করুন।

    No feed items found.