বর্তমান বিশ্বের একটি অন্যতম সমস্যা শরণার্থী সংকট। সমুদ্রের পাড়ে মুখ থুবড়ে পড়ে থাকা তিন বছরের সিরীয় শিশু আইলান কুর্দির প্রাণহীন দেহ দেখে থমকে গিয়েছিল বিশ্ব। কিন্তু তাতেও বিশ্বনেতাদের টনক নড়েনি। শরণার্থী সমস্যা থেকে উত্তরণের ভালো কোনো খবর পাওয়া যায়নি। নিকট ভবিষ্যতেও শরণার্থীদের জন্য ভালো কোনো খবর আসবে বলে মনে হয় না।
কারণ বিশ্বে প্রতিনিয়ত শরণার্থী সংকট প্রকট আকার ধারণ করছে। বিশ্বের মোট জনসংখ্যার প্রায় এক শতাংশ আজ শরণার্থীতে পরিণত হয়েছে, যার সংখ্যা হবে প্রায় ৮ কোটি। সবচেয়ে বেশি শরণার্থীতে পরিণত হয়েছে সিরিয়া, ইরাক ও ইয়েমেনের নাগরিকরা। এদিকে আমাদের পাশের দেশ মিয়ানমারের রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর বিরাট একটা অংশ আশ্রয়প্রার্থী হিসাবে আমাদের দেশে অবস্থান করছে।
বর্তমানে প্রায় ১ কোটি ২০ লাখ সিরীয় নাগরিক বিভিন্ন দেশে শরণার্থী হিসাবে অবস্থান করছে। কয়েক বছর আগে জাতিসংঘের শরণার্থীবিষয়ক হাইকমিশন এই শরণার্থীদের পশ্চিমা দেশে পাঠানোর উদ্যোগ নেয়। অবাক করা বিষয় হচ্ছে, ইরাক ও সিরিয়ার নিকটবর্তী দেশ কাতার, ওমান, সংযুক্ত আরব আমিরাত, এমনকি সৌদি আরবের নাম এ তালিকায় নেই। কেন তারা সিরিয়ার নাগরিকদের সাহায্য করতে এগিয়ে আসছে না?
এ ব্যাপারে এই দেশগুলোর যুক্তি হলো, তারা কয়েক বছর ধরেই আর্থিক সাহায্য দিয়ে আসছে। প্রথমেই মনে রাখা দরকার, জাতিসংঘের শরণার্থীবিষয়ক কনভেনশনে স্বাক্ষর না করায় শরণার্থীদের আশ্রয় দেওয়ার ব্যাপারে এসব দেশের কোনো বাধ্যবাধকতা নেই। এছাড়া আরব দেশগুলোতে শরণার্থী গ্রহণ করা বা না করার মধ্যে শিয়া-সুন্নি দ্বন্দ্বের বিষয়টিও উঠে এসেছে।
শরণার্থীদের মধ্যে বিভিন্ন সন্ত্রাসী গোষ্ঠী ঢুকে পড়ে কিনা, এটাও অজুহাত হিসাবে দাঁড় করানো হচ্ছে। অনুমান করা হচ্ছে, বর্তমান অবস্থা অব্যাহত থাকলে আগামী কয়েক বছরের মধ্যে সব মিলে ১৬ লাখ মানুষ ইউরোপের দেশগুলোতে আশ্রয়প্রার্থী হবে। ফলে এখন ইউরোপীয় ইউনিয়ন যে ১ লাখ ২০ হাজার মানুষকে গ্রহণ করার পরিকল্পনা করেছে, যুক্তরাষ্ট্রের ইলিনয় স্টেট ইউনিভার্সিটির রাজনীতি ও সরকার বিভাগের অধ্যাপক আলী রিয়াজ বিষয়টিকে ‘সমুদ্রে শিশিরবিন্দু’ বলে উল্লেখ করেছেন।
কিন্তু দুঃখের কথা হলো, এখনো এ প্রক্রিয়া শুরু হয়নি। নানা সমস্যায় আটকে আছে শরণার্থী স্থানান্তরের প্রক্রিয়া। যে কোনো শরণার্থী পরিস্থিতি সংশ্লিষ্ট দেশটির জন্য যেমন সংকট সৃষ্টি করে, তেমনি প্রতিবেশী অন্যান্য দেশের জন্যও উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা ও বিরক্তির কারণ হয়ে দাঁড়ায়। শরণার্থীরা ওই দেশটির ভেতরে এবং অন্যান্য দেশেও স্বাস্থ্য, শিক্ষা, ওই দেশের জনগণের জীবনযাত্রাসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে সংকট সৃষ্টি করে।
অন্যদিকে বছরের পর বছর শরণার্থী হিসাবে জীবনযাপন করায় শিক্ষাদীক্ষা থেকে শরণার্থী শিশুরা পিছিয়ে পড়ে। এছাড়া অনেক শরণার্থী তাদের ভূখণ্ড, পরিচয় হারিয়ে অনেকটা আগ্রাসী আচরণ শুরু করে। সাম্প্রতিকালে রোহিঙ্গাদের আচরণেও এমনটা প্রকাশ পাচ্ছে। তাই বিশ্বে শান্তি প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে দ্রুত শরণার্থী সংকটের সমাধান প্রয়োজন।
বিশ্বের কোটি মানুষের আশা, আগামী ২০ জুন বিশ্ব শরণার্থী দিবসে বিশ্ববিবেক আবারও নতুন করে শরণার্থী সংকট মোকাবিলায় সোচ্চার হবে।
<p style="text-align: center;">সম্পাদক মন্ডলীর সভাপতিঃ মোহাম্মদ আফছার খান সাদেক</p> <p style="text-align: center;">সম্পাদক ও প্রকাশকঃ মিলাদ মোঃ জয়নুল ইসলাম</p> <p style="text-align: center;">প্রকাশনালয়ঃ রিপোর্টার লজ, কসবা, বিয়ানীবাজার, সিলেট ।</p> <p><hr></p> <p style="text-align: center;"><span class="x193iq5w xeuugli x13faqbe x1vvkbs x1xmvt09 x1lliihq x1s928wv xhkezso x1gmr53x x1cpjm7i x1fgarty x1943h6x xtoi2st xw06pyt x1603h9y x1u7k74 x1xlr1w8 xzsf02u x1yc453h" dir="auto"><span class="x1lliihq x6ikm8r x10wlt62 x1n2onr6 x1120s5i">বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ</span></span> উত্তর বাজার কেন্দ্রিয় মসজিদ মার্কেট (২য় তলা), বিয়ানীবাজার, সিলেট । <br>মোবাঃ ০১৮১৯-৬৫৬০৭৭, ০১৭৩৮-১১ ৬৫ ১২ ইমেইলঃagamiprojonma@gmail.com</p>
Copyright © 2025 Agami Projonmo. All rights reserved.