
স্টাফ রিপোর্টার:
কোরআন নাজিলের মাস রমজান চলছে। খতমে তারাবি রমজানের গুরুত্বপূর্ণ অনুসঙ্গ। সারাদিন রোজা রেখে রোজাদার শরিক হন তারাবির জামাতে। হাফেজের মায়াবি কন্ঠে বাজে কোরআনের মধুর সুর। ঐশী বাণীর সুরে জুড়িয়ে যায় হৃদয়। এ বছর সে আনন্দ শঙ্কায় পরিণত হয়েছে। করোনা ভাইরাসের কারণে থমকে আছে পুরো বিশ্ব। বৈশ্বিক মহামারীতে রূপ নিয়েছে করোনা ভাইরাস। সীমিত পরিসরে খোলা আছে বাংলাদেশের মসজিদ। তবে এসব মসজিদে মুসল্লীদের উপস্থিতি নেই বললেই চলে।
বিয়ানীবাজারের ইসলামী ফাউন্ডেশন সূত্র জানায়, উপজেলার অন্তত: ২শতাধিক মসজিদে পবিত্র তারাবির নামাজে কোরআনে খতম অনুষ্টিত হয়। এসব মসজিদে দুইজন করে হাফেজ থাকতেন। যারা তারাবির নামাজ পড়াতেন। এছাড়াও অন্যান্য মসজিদে সুরাহ তারাবিহ হয়। সুরাহ তারাবিহ আদায় করা মসজিদগুলোতেও দুইজন করে হাফেজ দায়িত্ব পালন করেন। এবার আর সেটি হচ্ছেনা।
সারাদেশের ন্যায় বিয়ানীবাজারের মসজিদগুলোরও একই অবস্থা। আর তারাবির নামাজ পড়াতে না পেরে এখানকার হাফেজদের কান্না যেন থামছেনা।
এ সময়ে হাফেজরা পুরোপুরি ব্যস্ত থাকার কথা ছিলো তেলাওয়াতে। পুরোদমে চলত তারাবির প্রস্তুতি। অথচ রমজান শুরুর আগে তারাবির মসজিদ ঠিক করার জন্য দৌড়ঝাঁপ করত অনেক হাফেজ। বিভিন্ন মসজিদে ইন্টারভিউ দিত। মসজিদ কমিটিও তৎপর থাকেন পছন্দের হাফেজ নিয়োগ দিতে। কিন্তু এবার আর তেমনটি দেখা যায়নি।
হাফেজ আল মাহমুদ। গত রমজানে তারাবি পড়িয়েছেন চারখাই ইউনিয়নের একটি জামে মসজিদে। এ বছর একই মসজিদে তারাবি পড়ানোর কথা ছিল। তিনি বলেন, ‘বর্তমান এমন পরিস্থিতিতে ওই মসজিদে তারাবির নামাজ চললেও কমিটি থেকে আমাকে নিষেধ করা হয়েছে। ওই মসজিদে এবার সুরাহ তারাবি পড়া হবে।’ তিনি বলেন, সারাবছর আমরা রমজানের অপেক্ষা করি। তারাবির নামাজ শেষে মাস শেষ হলে মুসল্লীদের কাছ থেকে প্রাপ্ত হাদিয়া আমরা বড় কাজে লাগাতে পারি। তিনি টানা এগারো বছর ওই মসজিদে তারাবি পড়িয়েছেন। তার চাওয়া- আল্লাহ যেন পরিবেশ ভালো করে দেন। প্রতিটি মসজিদে যেন কোরআনের সুর বাজে- প্রভুর দরবারে এটাই ফরিয়াদ।
হাফেজ মুহাম্মদ আনোয়ার গত বছর তারাবি পড়িয়েছিলেন মুল্লাপুরের একটি জামে মসজিদে। তিনি বললেন, ‘রমজানের একমাস আগে তারাবির জন্য বেশি প্রস্তুতি নিই। কিন্তু এ বছর হাফেজদের ডাক পড়েনি। মানসিকভাবে তারাবির জন্য আমি প্রস্তুত থাকলেও কোন মসজিদে ইন্টারভিউ হয়নি। হাফেজদের জন্য তারাবি খুবই গুরুত্বপূর্ণ।’
হাফেজ কারী কাওসার আহমদ। গত রমজানে তারাবি পড়িয়েছেন পৌরশহরের একটি জামে মসজিদে। এ বছর তারাবি বন্ধ, কি করবেন? জানতে চাইলে উত্তরে তিনি বলেন, ‘রমজান মাস হাফেজদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ। সারা বছর এ মাসের জন্য অপেক্ষায় থাকেন হাফেজরা। কিন্তু এবারের পবিবেশটা ভিন্ন। মসজিদে জনসমাগম করে তারাবিহ বন্ধ। টানা এক যুগ ধরে তারাবি পড়াচ্ছি। কোন বছর বাদ যায়নি । হাফেজদের বলব নিজ নিজ বাসায় তারাবি চালু করার জন্য। তাহলে কোরআন খতম হবে তারাবিও আদায় হবে।
সংবাদটি শেয়ার করুন।