প্রকাশনার ১৫ বছর

রেজি নং: চ/৫৭৫

১লা জুলাই, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
১৭ই আষাঢ়, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
৬ই মহর্‌রম, ১৪৪৭ হিজরি

বিয়ানীবাজারে আওয়ামীলীগের কাউন্সিল ঘিরে স্নায়ুচাপ, উত্তেজনা

admin
প্রকাশিত নভেম্বর ৩, ২০১৯, ০৯:৪৩ পূর্বাহ্ণ
বিয়ানীবাজারে আওয়ামীলীগের কাউন্সিল ঘিরে স্নায়ুচাপ, উত্তেজনা

স্টাফ রিপোর্টার :
দীর্ঘ ১৭ বছর পর বিয়ানীবাজার উপজেলা আওয়ামীলীগের সম্মেলনের দিনক্ষণ ঘোষণা করা হয়েছে। আগামী ১৪ নভেম্বর ক্ষমতাসীন দলের এখানকার নেতৃত্ব নির্বাচন করার প্রক্রিয়া শুরু করেছেন সংশ্লিষ্টরা। তবে কোন পদ্ধতিতে উপজেলার সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক নির্ধারণ করা হবে, তা নিয়ে সন্দিহান দলীয় নেতাকর্মীরা। এ নিয়ে সভাপতি-সম্পাদক হতে আগ্রহী প্রার্থীদের মধ্যে চাপা উত্তেজনা বিরাজ করছে। দফায়-দফায় বৈঠক করে শক্তি ও জনবল বৃদ্ধির কৌশল নির্ধারণ করছেন তারা।

অবশ্য কেন্দ্রীয় ও জেলা নেতৃবৃন্দ তৃণমুলের নেতৃত্ব নির্বাচনে ভোটের কথা স্পষ্টভাবে উল্লেখ করলেও ‘বিশেষক্ষেত্রে’ সিলেকশন প্রক্রিয়ায়ও নেতা মনোনীত করার রেওয়াজ চালু আছে। বিয়ানীবাজারেও আওয়ামীলীগের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক মনোনীত করতে ‘ইলেকশন নাকি সিলেকশনে’ নির্ধারণ করা হবে, সে প্রশ্নই এখন সবার আলোচনায়। এদিকে বিয়ানীবাজার-গোলাপগঞ্জ সংসদীয় নির্বাচনী এলাকার সাংসদ নুরুল ইসলাম নাহিদ আওয়ামীলীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য এবং সিলেট বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতা। নিজ নির্বাচনী এলাকায় উপজেলা পর্যায়ের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক নির্বাচনে কেন্দ্র এবং জেলার নেতৃবৃন্দ তাঁর মতামতকেও গুরুত্ব দিবেন বলে মনে করছেন দলীয় নেতাকর্মীরা। এতে কাউন্সিলে নেতৃত্ব নির্বাচনের প্রক্রিয়া নিয়ে সন্দেহ-অবিশ্বাস ক্রমেই বাড়ছে।

অপরদিকে গত উপজেলা নির্বাচনে যারা দলের বিদ্রোহী প্রার্থী হয়ে নির্বাচন করেছেন, সাধারণ ক্ষমা ঘোষণা করার মধ্য দিয়ে আসন্ন কাউন্সিলে তাদের প্রতিদ্বন্ধিতার পথ সুগম হওয়ায় তারাও বেশ তৎপর হয়ে ওঠেছেন। এ বিষয়ে কেন্দ্রীয় আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন জানান, বিদ্রোহীদের ক্ষমা করে দিয়েছেন দলের সাংগঠনিক নেত্রী। তবে অনুপ্রবেশকারী বিদ্রোহীদের ক্ষেত্রে আমরা সতর্ক থাকবো। তিনি বলেন, যারা দলের নাম ভাঙ্গিয়ে ফায়দা লুটছে, দূর্নীতি-অনিয়মে জড়াচ্ছে, তাদের রক্ষা নেই। আর ত্যাগী আওয়ামীলীগ নেতাকর্মীরা কাউন্সিলে প্রতিদ্বন্ধিতা করলে কারো আপত্তি থাকার কথা নয়।

উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি আব্দুল হাছিব মনিয়া বলেন, বিয়ানীবাজার আওয়ামীলীগের কাউন্সিল অনুষ্টানে প্রায় ২বছর আগে প্রতিটি ইউনিয়ন থেকে ২১জন কাউন্সিলারের একটি তালিকা জমা নেয়া হয়। কিন্তু গঠনতন্ত্র পরিবর্তন হওয়ায় এখন ইউনিয়ন প্রতি আরো ১০জন করে কাউন্সিলার বাড়ানো হয়েছে।

সূত্র জানায়, কাউন্সিলার বাড়ানোর এমন সিদ্ধান্তে অনেক ইউনিয়নে কোন্দল বৃদ্ধি পেয়েছে। লাউতায় পূর্ণাঙ্গ কমিটি না হওয়ায় কাউন্সিলার তালিকা নিয়ে অসন্তোষ সৃষ্টি হয়েছে। শেওলায় পাল্টাপাল্টি কমিটি থাকায় নতুন করে কাউন্সিলার তালিকা প্রনয়নের লিখিত দাবী জানিয়েছেন একাংশের সভাপতি ছালিক আহমদ খান। গত কয়েকমাস থেকে উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি আব্দুল হাছিব মনিয়া এবং সাধারণ সম্পাদক আতাউর রহমান খানের মধ্যকার প্রকাশ্য দ্বন্ধ এখন সবার জানা। তাদের মধ্যে মুখ দেখাদেখি পর্যন্ত বন্ধ। বিয়ানীবাজার আওয়ামীলীগের একটি শক্ত ঘাঁটি হিসেবে সর্বত্র পরিচিত হলেও সম্মেলন নিয়ে সংশ্লিষ্টদের গা-ছাড়া ভাব তৃণমূলে তেমন জাগরণ তুলতে পারেনি।

নেতাকর্মীরা জানান, বিয়ানীবাজার উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি পদে আব্দুল হাছিব মনিয়া, আতাউর রহমান খান, মো: নজমুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক পদে হারুনুর রশীদ দিপু, মোহাম্মদ জাকির হোসেন, দেওয়ান মাকসুদুল ইসলাম আউয়াল, আব্দুস শুকুর, আবুল কাশেম পল্লব, জামাল হোসেন কাউন্সিলারদের দ্বারে-দ্বারে যাচ্ছেন। অন্যান্যপদে আরো আগ্রহীদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলেন চেয়ারম্যান মাহমুদ আলী, চেয়ারম্যান জহুর উদ্দিন, চেয়ারম্যান সিহাব উদ্দিন, চেয়ারম্যান গৌছ উদ্দিন, চেয়ারম্যান আব্দুস সালাম, মুড়িয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন কবির, আরবাব হোসেন খান, ভাইস চেয়ারম্যান রুকসানা বেগম লিমা, সাবেক ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান রুমা চক্রবর্তী, যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী সাব্বির উদ্দিন, কামরুল হক, আলমগীর হোসেন রুনু, প্রভাষক আব্দুল খালিক, আতিকুর রহমানসহ অনেকেই।

উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আতাউর রহমান খান বলেন, জেলার নেতৃবৃন্দের নির্দেশনা মেনে কাউন্সিলর তালিকা প্রণয়ন, কার্যনির্বাহী পরিষদের সভা আহবান এবং পরবর্তী পদক্ষেপ বিষয়ে দায়িত্বশীলদের সাথে আলোচনা করে নির্ধারণ করা হয়েছে। উপজেলা আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মোহাম্মদ জাকির হোসেন জানান, সম্মেলনের পুরো প্রস্তুতি চলছে। কাউন্সিলছাড়া নেতৃত্ব নির্বাচনের আর কোন সুযোগ নেই।

সংবাদটি শেয়ার করুন।

    No feed items found.