প্রকাশনার ১৫ বছর

রেজি নং: চ/৫৭৫

১লা জুলাই, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
১৭ই আষাঢ়, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
৬ই মহর্‌রম, ১৪৪৭ হিজরি

বিয়ানীবাজারে হঠাৎ ধরপাকড়: অচেনা পরিস্থিতিতে আ’লীগ

editor
প্রকাশিত অক্টোবর ৫, ২০২৪, ০১:১৬ পূর্বাহ্ণ

 

স্টাফ রিপোর্টার:

 

ছাত্র-জনতার গণ অভ্যুথানের পর অজানা পরিস্থিতিতে পড়েছে বিয়ানীবাজার আওয়ামীলীগ। দেড়যুগ পর অপ্রত্যাশিত এই ভূতূড়ে পরিবেশ কল্পনাই করতে পারেনি দলীয় নেতাকর্মীরা। দলীয় প্রধান শেখ হাসিনার পালিয়ে যাওয়ার পর থেকে বৈরী রাজনৈতিক পরিবেশের কারণে আওয়ামীলীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা তেমন বাইরে বের হননি। তবে ২০ আগস্টের পর থেকে সব হিসাব পাল্টাতে শুরু করে তাদের। এদিন প্রথম হত্যা মামলা দায়েরের পর থেকে আত্মগোপনে চলে যান দলটির নেতাকর্মীরা।

 

এরপর সরকার পতনের দিন ৫ আগস্টের ঘটনার জের ধরে একে-একে চারটি মামলা দায়ের করা হয়। এসব মামলায় ধারাবাহিকভাবে আওয়ামীলীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের আসামী করা হলে এক অনিশ্চিত দিনলিপি গুণতে শুরু করেন তারা। তবে আত্মগোপনে থাকলেও পুলিশ ও আইনশৃংখলা বাহিনীর তৎপরতা কম থাকায় কিছুটা নির্ভার ছিলেন সদ্য ক্ষমতা হারানো দলটির সকল পর্যায়ের নেতাকর্মী। চারটি মামলায়ই আসামী হয়েছেন উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক বিতর্কিত সাধারণ সম্পাদক জাহিদুল হক তাহমিদ। তিনি চিনি ছিনতাই ঘটনায় পৃথক আরেকটি মামলাসহ মোট ৬টি মামলার আসামী। এরপরই আছেন সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান আবুল কাশেম পল্লব। তিনিও বিয়ানীবাজার থানার ৩টি, গোলাপগঞ্জ থানার ২টি এবং সিলেট মেট্রোপলিটন এলাকায় দায়ের হওয়া আরো ২টি মামলার আসামী। বিয়ানীবাজার-গোলাপগঞ্জ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য নুরুল ইসলাম নাহিদ বিয়ানীবাজার থানায় ২টি, গোলাপগঞ্জ থানায় দায়ের হওয়া আরো ৫টিসহ মোট ৭টি মামলার আসামী।

 

 

সম্প্রতি বিয়ানীবাজার থানায় নতুন অফিসার ইনচার্জ (ওসি) এনামুল হক চৌধুরী যোগদানের পর ফের দু:শ্চিন্তায় পড়ে স্থানীয় আওয়ামীলীগ। ৫ আগস্টের ঘটনায় দায়ের হওয়া মামলায় নতুন গতি পায়। শুক্রবার বিকেল থেকে পরিস্থিতি আরোও অবনতি হতে থাকে। হঠাৎ করে ধরপাকড় শুরু করে থানা পুলিশ। ওয়ার্ড আওয়ামীলীগ নেতা সাইফুল ইসলাম রোকন (৩৭) ও ছাত্রলীগ নেতা কলিম উদ্দিন (৩৪)-কে গ্রেফতার করার খবর ছড়িয়ে পড়লে আতঙ্কিত হয়ে পড়েন নেতাকর্মীরা। গ্রেফতারকৃত দু’জনই হত্যা মামলার এজাহারনামীয় আসামী। পুলিশী অভিযানের পর বাসা-বাড়িতে থাকা আওয়ামীলীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা নিরাপদে চলে যেতে থাকেন। অনেকেই ফোন বন্ধ করে পৃথক স্থানে আত্মগোপনে চলে যান। সন্ধ্যার পর থেকে পৌরশহরের কোথাও আওয়ামীলীগের কর্মী-সমর্থককে দেখা যায়নি।

 

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক আওয়ামীলীগ নেতা জানান, রাজনীতির এমন পরিস্থিতিতে হতাশায় আচ্ছন্ন কর্মী-সমর্থক ও অনুসারীরা। নিরাপত্তাহীনতাও প্রবলভাবে ঝেঁকে বসেছে আমাদের ভেতরে। শুনেছি আরোও মামলা দায়ের করা হবে। আসলে আমাদের রাজনৈতিক এতিম বলে মনে হচ্ছে। তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, উপজেলা পর্যায়ের অনেক নেতাই মোবাইল নাম্বার বন্ধ রেখেছেন, পরিবর্তন করে নতুন নাম্বার নিয়েছেন। নিরাপদ জায়গায় আশ্রয় নিয়ে বসে আছেন। অবশ্য বিএনপির এক নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, গত ১৬টি বছর পথে-ঘাটে, জঙ্গলে কটিয়েছে বিএনপি-জামায়াতসহ বিরোধী রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীরা। আওয়ামীলীগ অল্পদিনেই হাঁফিয়ে ওঠলো।

 

বিয়ানীবাজার থানার ফিসার ইনচার্জ (ওসি) এনামুল হক চৌধুরী বলেন, কোন বিশেষ ধরপাকড় নয়, নিয়মিত মামলার আসামীদের গ্রেফতার করা হচ্ছে। পুলিশের এ অভিযান অব্যাহত থাকবে।

সংবাদটি শেয়ার করুন।

    No feed items found.