প্রকাশনার ১৫ বছর

রেজি নং: চ/৫৭৫

১লা জুলাই, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
১৭ই আষাঢ়, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
৬ই মহর্‌রম, ১৪৪৭ হিজরি

পাঠ্যবই ছাপানো নিয়ে সংকট

admin
প্রকাশিত নভেম্বর ৬, ২০২১, ০১:৫৬ অপরাহ্ণ
পাঠ্যবই ছাপানো নিয়ে সংকট

 

আগামী শিক্ষাবর্ষের পাঠ্যবই ছাপা নিয়ে নানা সংকট তৈরি হয়েছে। প্রথমত, মাধ্যমিক স্তরের নতুন বইয়ের বিষয়ে এখন পর্যন্ত প্রেসের সঙ্গে চুক্তিই হয়নি।

দ্বিতীয়ত, বাজারে নেই এমন কাগজে প্রাক-প্রাথমিক স্তরের বই ছাপানোর শর্ত দেওয়া হয়েছে। ফলে এ স্তরের একটি বইও ছাপা হয়নি।

এই দুই সংকট ছাড়া গত বছরের বকেয়া বিল ও মামলার কারণেও ছাপার বিষয়টি বিলম্বিত হতে পারে। প্রতিবছর ১ জানুয়ারি শিক্ষার্থীদের হাতে নতুন বই তুলে দেওয়া হয়। হিসাব করে দেখা যাচ্ছে, নতুন শিক্ষাবর্ষ শুরু হতে বাকি আছে মাত্র ৫৬ দিন। বিদ্যমান পরিস্থিতিতে যে যথাসময়ে শিক্ষার্থীদের হাতে বই পৌঁছানো যাবে না, তা বলাই বাহুল্য।

অবশ্য জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের (এনসিটিবি) চেয়ারম্যান অধ্যাপক নারায়ণ চন্দ্র সাহা বলছেন ভিন্ন কথা। তিনি বলছেন, পাঠ্যপুস্তক নিয়ে প্রতিবছরই সংকটের কথা বলা হয়; কিন্তু শেষ পর্যন্ত শিক্ষার্থীরা বই পেয়ে যায়। তার ভাষ্য অনুযায়ী, প্রাথমিকের বই পুরোদমে মুদ্রিত ও সরবরাহ হচ্ছে, মাধ্যমিকের ক্ষেত্রে বেশির ভাগ বইয়ের চুক্তি শেষ হয়েছে, কিছু বই সরবরাহ হয়েছে। প্রাক-প্রাথমিকের যে সমস্যা, তা দু-একদিনের মধ্যে কেটে যাবে বলে জানান তিনি। এনসিটিবির চেয়ারম্যানের এসব কথা যে ধোপে টেকে না, তা প্রমাণ করা যায় মুদ্রণ শিল্প সমিতির সাধারণ সম্পাদক জহুরুল ইসলামের বক্তব্য দিয়ে। তিনি বলছেন, তারা দেশি-বিদেশি বিভিন্ন উৎসে খোঁজ নিয়েও এনসিটিবির নির্ধারিত প্যারামিটারের কাগজ পাননি। এ নিয়ে একাধিকবার ধরনা দেওয়া হলেও এনসিটিবির দায়িত্বপ্রাপ্তরা সমস্যার নিষ্পত্তি করেননি।

ফলে সবার আগে দরপত্র দেওয়া হলেও এ কাজ শেষ হয়নি। তিনি অভিযোগ করেছেন, অবাস্তব শর্ত দিয়ে কাগজের মান নির্ধারণ করার ক্ষেত্রে হয় এনসিটিবি ভুল করেছে, নতুবা এর পেছনে কোনো দুরভিসন্ধি রয়েছে।

এনসিটিবি কর্তৃপক্ষ নিজেদের দুর্বলতা স্বীকার না করে মুদ্রাকরদের ওপর দায় চাপিয়ে এখন পুনঃদরপত্রে যেতে চাইছে। তিনি অভিযোগ করেছেন, এনসিটিবি কর্তৃপক্ষ হয়তো দুরভিসন্ধির মাধ্যমে বিদেশিদের হাতে কাজ তুলে দিতে চাচ্ছে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, মাধ্যমিক স্তরের ৪৮ শতাংশ বই ছাপানোর চুক্তিই হয়নি এখনো। চুক্তির পর আরও ১৫ দিন সময় পাওয়া যায় কার্যাদেশ গ্রহণের জন্য। এ স্তরে বইয়ের সংখ্যা ২৫ কোটি। সেই হিসাবে ১০ কোটি বই নিয়ে সংকট প্রায় অনিবার্য। অন্যদিকে প্রাথমিকের ১০ কোটি বইয়ের মধ্যে ২ কোটির মতো সরবরাহ হয়েছে। এ ক্ষেত্রেও নির্ধারিত সময়ে বই পাওয়ার সম্ভাবনা কম।

নতুন বই হাতে নতুন ক্লাসে শিক্ষার্থীদের অভিষেক ঘটবে-এটাই প্রত্যাশিত। কিন্তু প্রতিবছরই নির্ধারিত সময়ে বই ছাপানো ও সরবরাহ করার কাজে বিঘ্ন ঘটছে। সময়মতো বই না পেলে শিক্ষার্থীদের মধ্যে ক্ষোভ ও হতাশা সৃষ্টি হওয়া স্বাভাবিক।

শুধু শিক্ষার্থী নয়, তাদের অভিভাবকরাও সময়মতো বই না পেলে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েন। শিক্ষার্থীদের হাতে বই তুলে দেওয়ার দায়িত্ব যেহেতু এনসিটিবির ওপর ন্যস্ত, তাই সময়মতো বই না পাওয়া গেলে তাদেরই জবাবদিহি করতে হবে। এবারের নতুন বই ছাপানো নিয়ে যে সংকট তৈরি হয়েছে, দ্রুতই তার নিষ্পত্তি হবে-এটাই প্রত্যাশা।

সংবাদটি শেয়ার করুন।

    No feed items found.