সম্পাদকীয় ডেস্ক:
ছোট ছোট দুর্নীতির অভিযোগের অনুসন্ধান ও মামলার তদন্তকাজ নিজস্ব গতিতে চললেও ‘রাঘববোয়াল’দের ক্ষেত্রে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) কার্যক্রমে কেন স্থবিরতা পরিলক্ষিত হচ্ছে, এ প্রশ্ন এড়িয়ে যাওয়ার সুযোগ নেই। উল্লেখ্য, ‘দুর্নীতির বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ বিশ্ব’ প্রতিপাদ্যে গতকাল আন্তর্জাতিক দুর্নীতিবিরোধী দিবস পালন করেছে সংস্থাটি। তবে ঢাকঢোল পিটিয়ে দিবস পালন করলেও নির্ধারিত সময়ে অনুসন্ধান ও তদন্ত শেষ করতে পারছেন না সংস্থার কর্মকর্তারা।
দেখা গেছে, ব্যর্থতার জন্য দায়িত্বপ্রাপ্তদের সরিয়ে নতুন কর্মকর্তা নিয়োগের বিধান থাকলেও বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই তা প্রতিপালিত হয় না; বরং সাহসের সঙ্গে সত্য উদ্ঘাটন করে ফেঁসে গেছেন কোনো কোনো কর্মকর্তা, এমন নজির সৃষ্টি হয়েছে। কমিশন আইনের ২০(ক) ১ ও ২ উপধারা অনুযায়ী সর্বোচ্চ ১৮০ দিনের মধ্যে তদন্ত শেষ করার বাধ্যবাধকতা রয়েছে। এ সময়ের মধ্যে তদন্ত কর্মকর্তা তদন্ত শেষ করতে ব্যর্থ হলে ৯০ দিনের মধ্যে নতুন তদন্ত কর্মকর্তা নিয়োগ করতে পারবে দুদক।
অন্যদিকে ২০০৭ সালের দুর্নীতি দমন কমিশন বিধিমালার ৭ বিধিতে অনুসন্ধানকারী কর্মকর্তাকে নির্দেশ পাওয়ার পর সর্বোচ্চ ৪৫ দিনের মধ্যে অনুসন্ধান শেষ করতে বলা হয়েছে। এ সময়ের মধ্যে অনুসন্ধান শেষ করতে না পারলে যুক্তিসংগত কারণ দেখিয়ে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা আরও ৩০ দিন সময় নিতে পারবেন।
এছাড়া ২০০৪ সালের দুর্নীতি দমন কমিশন আইনের ১৯ ও ২০ ধারায় অনুসন্ধান ও তদন্তের ক্ষেত্রে দুদককে বিশেষ ক্ষমতাও দেওয়া হয়েছে। তবে ব্যর্থতার জন্য কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণের কোনো দৃষ্টান্ত স্থাপিত না হওয়ায় কেউই বেঁধে দেওয়া সময়ের বিধান মানছেন না।
বস্তুত কেবল রাজনৈতিক ব্যক্তি নন, অনেক প্রভাবশালী ব্যবসায়ী ও আমলার দুর্নীতির তদন্তকাজেও দুদকের কার্যক্রম গতি পাচ্ছে না। বলা বাহুল্য, তদন্ত ও বিচার প্রক্রিয়া দীর্ঘায়িত হওয়ায় সাংবিধানিক এ সংস্থার প্রতি মানুষের আস্থার সংকট ঘনীভূত হচ্ছে। অভিযোগের তালিকায় প্রশাসনিক ও রাজনৈতিকভাবে প্রভাবশালীরা থাকায় দুদক প্রভাবিত হচ্ছে কিনা, এমন প্রশ্নও উঠেছে।
এ পরিপ্রেক্ষিতে আইনি কাঠামোর মধ্যে নির্ধারিত সময়ে বিচার প্রক্রিয়া শেষ করা জরুরি। সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান হিসাবে দুদকের একমাত্র কাজ হচ্ছে দুর্নীতি দমন। এক্ষেত্রে অপরাধীদের মধ্যে কে কোন দলের অনুসারী বা কতটা প্রভাবশালী, তা বিবেচনায় নেওয়ার কোনো সুযোগ নেই। অথচ দুদকের কাজকর্মে তা প্রকটভাবে প্রকাশ পাচ্ছে, যা মেনে নেওয়া যায় না।
জনগণের আস্থার জায়গা অটুট রাখতে হলে দুদককে অবশ্যই তার কার্যকারিতার প্রমাণ রাখতে হবে। এর ব্যতিক্রম ঘটলে ‘আজ্ঞাবহ’ প্রতিষ্ঠানের কলঙ্ক ঘুচবে না। অনেক দেশেই দুর্নীতি দমনসংক্রান্ত প্রতিষ্ঠান স্বাধীনভাবে কাজ করে, সরকারের অংশ হিসাবে নয়। দুঃখজনক হলেও সত্য, এক্ষেত্রে দুদক নিতান্তই অসহায়। কাগজে-কলমে স্বাধীন প্রতিষ্ঠান বলা হলেও প্রতিষ্ঠানটির কাজকর্মে তার ছাপ নেই বললেই চলে। এর ফল হিসাবেই প্রতিষ্ঠানটিতে এ ধরনের অনিয়ম গেঁড়ে বসেছে কিনা, ভেবে দেখা উচিত। যদি এ রকম কিছু হয়, তাহলে ‘তল্পীবাহক’ কিংবা ‘জি-হুজুর’ ধরনের প্রতিষ্ঠানের দুর্বলতাগুলো কাটিয়ে ওঠার পদক্ষেপ নিতে হবে সর্বাগ্রে। তা না হলে দুদক একটি সাইনবোর্ডসর্বস্ব প্রতিষ্ঠানে পরিণত হবে। দেশের উন্নতির স্বার্থেই দুর্নীতির মূলোৎপাটন জরুরি। এ জন্য শক্ত হাতে সবকিছু নিয়ন্ত্রণের ক্ষমতা ও সদিচ্ছা থাকা প্রয়োজন প্রতিষ্ঠানটির।
<p style="text-align: center;">সম্পাদক মন্ডলীর সভাপতিঃ মোহাম্মদ আফছার খান সাদেক</p> <p style="text-align: center;">সম্পাদক ও প্রকাশকঃ মিলাদ মোঃ জয়নুল ইসলাম</p> <p style="text-align: center;">প্রকাশনালয়ঃ রিপোর্টার লজ, কসবা, বিয়ানীবাজার, সিলেট ।</p> <p><hr></p> <p style="text-align: center;"><span class="x193iq5w xeuugli x13faqbe x1vvkbs x1xmvt09 x1lliihq x1s928wv xhkezso x1gmr53x x1cpjm7i x1fgarty x1943h6x xtoi2st xw06pyt x1603h9y x1u7k74 x1xlr1w8 xzsf02u x1yc453h" dir="auto"><span class="x1lliihq x6ikm8r x10wlt62 x1n2onr6 x1120s5i">বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ</span></span> উত্তর বাজার কেন্দ্রিয় মসজিদ মার্কেট (২য় তলা), বিয়ানীবাজার, সিলেট । <br>মোবাঃ ০১৮১৯-৬৫৬০৭৭, ০১৭৩৮-১১ ৬৫ ১২ ইমেইলঃagamiprojonma@gmail.com</p>
Copyright © 2025 Agami Projonmo. All rights reserved.