
কেহ বলে উন্নয়নের ফেরিওয়ালা, কেহ বলে লেচু মিয়া, কেহ বলে ড: সৈয়দ মকবুল হোসেন, যে যে নামেই ডাকুক না কেন আপনাকে সবাই চিনে এবং ভালোবাসে। সিলেট- ৬ আসনের কিংবদন্তী এম. পি ছিলেন। অপনার পদচারনায় মুখর গোটা নির্বাচনী এলাকা। আপনার প্রশংসায় পঞ্চমুখ নির্বাচনী এলাকার জনগন। শুধু কিছু নিন্দুক বাদে। আপনাকে ভালোবেসে এ পন্যভূমি থেকে ২ বার সংসদ সদস্য নির্বাচিত করেছে। আপনি ছিলেন স্বতন্ত্র এম. পি। বাংলাদেশের ইতিহাসে মনে হয় আপনার প্রতিদ¦ন্ধি আপনি নিজে। স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসাবে অন্যকোন প্রার্থী হয়ত সিলেট-৬ আসন থেকে কোনদিন নির্বাচিত হবে বলে মনে হয় না। এর বহু মাত্রিক কারন ও আছে ।
আপনি ছিলেন একাধারে উচ্চ শিক্ষিত। যা কখনও অন্য প্রার্থীর জীবনে অর্জন করা সম্ভব নহে। সহজে সাধারন জনগনকে কি দিয়ে খুশি করা যায় বুঝে ফেলতেন। আপনি ছিলেন সত্যিকারের উন্নয়নের ফেরিওয়ালা। আপনার কাছে কোন উন্নয়নের বা কোন সমস্যা নিয়ে সাধারন জনগনের যাতায়ত ছিল উন্মুক্ত। কোন বিশেষ দালালকে বা চামচাকে ধরতে হত না। আপনি ছিলেন হতদরিদ্রদের একান্ত আপনজন। কোন বিশেষ কাজের জন্য সুপারিশ দরকার হলে সুপারিশ তো দিতেনই, এমনকি ডিও লেটার দিতেন। যদি সুবিধাভোগীর বিশেষ কোন কাজে ডি.ও লেটার লাগে। তাহলে আপনি খুশি হতেন। আপনি আর ও বলতেন এই সব উন্নয়ন বা সুবিধা ভোগীর কোন আর্থিক খরচের প্রয়োজন নেই । প্রযোজন হলে আপনি নিজে খরচ করবেন। এ সব কথার অনেক স্বাক্ষী আমি নিজে। এর নামও তো জনপ্রতিনিধি।
একটি ঘটনা না বললে না হয়। বিয়ানীবাজার থানার তিলপারা ইউনিয়নের জনপ্রতিনিধিগন কোন কারনে উন্নয়ন নিয়ে ২ ভাগে বিভক্ত। তখন আপনি আপনার উপশহরের বাসায় বৈঠক ডাকলেন। সমস্যাটি ছিল নালবহর- দাসউরা- সানেশ^র রাস্তাটি (এল.জি.ই.ডি) থেকে আগে হবে, না কি তিলপারা- মাটিজুরা- পিরেরচক- বিবিরাইবাজার রাস্তাটি আগে হবে। তখন আপনি হাসি মুখে বললেন সমস্যাটি আমার। কেননা আমি আপনাদের জনপ্রতিনিধি। এ সমস্যাটি আমি নিজ উদ্যেগে সমাধান করে দিব। এখানে আপনাদের কিছু করতে হবে না। শুধু সহযোগীতা করতে হবে। সমস্যাটি অল্পদিনের মধ্যেই সমাধান করে দিয়েছেন। আর্থিক অনুদান যদি কোথাও দিতে হয় তাহলে আমি দিব। আপনারা কোথাও কোন দালালকে একটি টাকাও দিবেন না। আমরা আপনার আতিতেথায় মুগ্ধ হয়ে আপনার বাসায় খাওয়া দাওয়া করে আমরা একে অপরের সাথে কোলাকোলি করে খুশি মনে বাসা থেকে বের হয়ে একে অপরকে জড়িয়ে ধরে কোলাকোলি করে বলতে শুনলাম এর নামই প্রকৃত জনপ্রতিনিধি। অনেক নিন্দুককে বলতে শুনেছি আপনি নাকি ভূয়া ডাক্টরেট ডিগ্রি অর্জন করেছেন। সে নিন্দুকরা কখনও আপনাকে ডাক্তার কখনও লেচু মিয়া ইত্যাদি নামে অভিহিত করেছে। আসলে নিন্দুকরাতো ডাক্তার কি বা ডক্টরেট কি তা তো বুঝে না। কারন সে তো এত সব লেখাপড়া করে নাই। বুঝবে কি করে।
জনশ্রæতি আছে, আপনার সংসদীয় আসনের জনগন দেখা করতে গেলে বলতেন, আপনি/ আপনারা কোথায় আছেন এ কথা বা ঠিকানা বলার পর আপনি নিজের গাড়ি পাঠিয়ে বাসায় নিয়ে আসতেন এবং তাদের সমস্যা শুনার পর যথাযত সমাধানের আশ^াস দিয়ে খাওয়া দাওয়া বা আপ্যায়ন শেষে আবার ও নিজস্ব গাড়ি দিয়ে লোকজনকে গন্তব্যে পাঠিয়ে দিতেন। দর্শনার্থীদের গাড়িভাড়া তাদের অজান্তে আপনার কর্মচারীর মাধ্যমে পরিশোধ করে দিতেন। অনুতপ্ত হতেন জনগন যে কষ্ট করে আমার বাসায় আসার জন্য। কেননা এ জনগনই তো আমাকে সম্মানিত করেছে। তাদের কথা কিছুকেই ভুলা যায় না।
এসব গুনের জন্য আপনি আপাদমস্তক একজন ভাল জনপ্রতিনিধি। আপনার বিকল্প আপনি নিজেই এ সংসদীয় আসনের জন্য। হয়ত আর কোন দিন নির্বাচন করবেন না। শুনেছি অসুস্থ। ঘর থেকে বেরিয়ে সংসদীয় আসনের জনগনকে দেখার ইচ্ছা থাকা সত্তে¡ও অসুস্থতার জন্য বের হতে পারেন না। প্রায়ই মুঠোফোনে খোঁজ নিয়ে থাকেন। আমরা সাধারন জনগন আপনার সুস্থতার জন্য দোয়া কামনা করি । আল্লাহ আপনাকে সুস্থ করে আমাদের মাঝে ফিরিয়ে আনুন, এ দোয়া কামনা করি। আমীন।
-লেখক, সভাপতি, সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন), বিয়ানীবাজার ও কলামিস্ট।
সংবাদটি শেয়ার করুন।