প্রকাশনার ১৫ বছর

রেজি নং: চ/৫৭৫

১লা জুলাই, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
১৭ই আষাঢ়, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
৬ই মহর্‌রম, ১৪৪৭ হিজরি

টিকা কার্যক্রম জোরদারের নির্দেশ

admin
প্রকাশিত জুলাই ২৯, ২০২১, ১০:১৬ অপরাহ্ণ
টিকা কার্যক্রম জোরদারের নির্দেশ

 

করোনাভাইরাসের টিকাদান কার্যক্রম জোরদার করার নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী জাহিদ মালেক এ কথা জানিয়েছেন। বস্তুত দেশে করোনার থাবা যেভাবে বিস্তার লাভ করছে, তাতে সিংহভাগ মানুষকে টিকার আওতায় আনার বিকল্প নেই।

করোনার ভয়াবহতা প্রতিরোধের এটিই একমাত্র উপায়। বিশেষজ্ঞদের মতে, যত বেশি মানুষকে টিকার আওতায় আনা সম্ভব হবে, করোনা মহামারি নিয়ন্ত্রণে তা তত বেশি ভূমিকা রাখবে। তাই যত দ্রুত সম্ভব দেশের অন্তত ৭০ শতাংশ মানুষকে পূর্ণ ডোজ টিকার আওতায় আনতে হবে। অন্যথায়, বড় ঝুঁকিতে পড়তে পারে দেশ।

চলতি বছরের ৭ ফেব্রুয়ারি দেশে গণটিকাদান কার্যক্রম শুরু হয়। কিন্তু ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউট চুক্তি অনুযায়ী টিকা সরবরাহ করতে না পারায় দেশে ৫৮ লাখের কিছু বেশি মানুষকে টিকাদানের পর টিকার প্রথম ডোজ দেওয়া স্থগিত করা হয়।

ফলে টিকাদান কর্মসূচি পড়ে অনিশ্চয়তার মুখে। এ অবস্থায় সরকার অন্যান্য উৎস থেকে টিকা সংগ্রহে তৎপরতা চালায়। এ চেষ্টার ফলে টিকা সংকট কাটতে শুরু করেছে। ইতোমধ্যে শুরু হয়েছে দ্বিতীয় পর্যায়ের গণটিকাদান কার্যক্রম।

তবে ৭০ শতাংশ মানুষকে দুই ডোজ টিকার আওতায় আনার জন্য যে পরিমাণ টিকার প্রয়োজন, তা সংগ্রহে আরও তৎপরতা চালানো দরকার। সেই সঙ্গে দেশে করোনার টিকা উৎপাদনে সরকারের পক্ষ থেকে সব ধরনের সহায়তা প্রদান করা উচিত বলেও মনে করি আমরা। বলার অপেক্ষা রাখে না, পর্যাপ্তসংখ্যক টিকাপ্রাপ্তি নিশ্চিত হলেই জোরদার হবে টিকা কার্যক্রম।

স্বাস্থ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন ওয়ার্ড, ইউনিয়ন ও উপজেলা পর্যায়ে করোনার টিকাদান কার্যক্রম জোরদার করা হচ্ছে। সেক্ষেত্রে এ কার্যক্রম যাতে সুষ্ঠু ও সুশৃঙ্খল হয় সেদিকেও লক্ষ রাখা প্রয়োজন। উল্লেখ্য, টিকার প্রথম পর্যায় সুশৃঙ্খলভাবে সম্পন্ন হলেও বর্তমানে টিকা ব্যবস্থাপনায় সমন্বয়হীনতা লক্ষ করা যাচ্ছে।

অভিযোগ রয়েছে, প্রবাসী শ্রমিকরা টিকা পেতে নানা ভোগান্তিতে পড়ছেন। সাধারণ মানুষের অনেকে নিবন্ধন করতে পারছেন না, নিবন্ধন করলেও এসএমএস পাচ্ছেন না, এসএমএস পেলেও হাসপাতাল থেকে বলা হচ্ছে টিকা শেষ। টিকা কার্যক্রমে গতি আনতে হলে এসব সমস্যার দ্রুত সমাধান করতে হবে। পর্যাপ্ত টিকা সংগ্রহের পাশাপাশি নিশ্চিত করতে হবে প্রয়োজনীয় সংখ্যক জনবলও।

টিকা কার্যক্রমের শুরুতে সাধারণ মানুষের মধ্যে টিকা নেওয়ার বিষয়ে নানা দ্বিধা-সংশয় কাজ করলেও বর্তমানে করোনার সংক্রমণ ও এর ফলে মৃত্যুর সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ায় টিকা গ্রহণে আগ্রহ বেড়েছে। তবে গ্রামের মানুষের, বিশেষ করে বয়স্কদের মধ্যে এ বিষয়ে এখনো অনীহা রয়েছে। অথচ গ্রামের বয়স্ক লোকেরাই করোনায় আক্রান্ত হচ্ছেন বেশি। মৃত্যুহারও বয়স্কদের মধ্যে বেশি। এ পরিপ্রেক্ষিতে গ্রাম পর্যায়ে টিকাদান কার্যক্রম সফল করতে হলে বয়স্ক ব্যক্তিদের মধ্যে টিকা গ্রহণে আগ্রহ সৃষ্টির উদ্যোগ নেওয়া দরকার।

গত দেড় বছরেরও বেশি সময় ধরে বিশ্বকে রীতিমতো ওলটপালট করে দিচ্ছে করোনাভাইরাস। এ মহামারিতে বিশ্বে লাখ লাখ মানুষের মৃত্যু হয়েছে। কোটি কোটি মানুষ পড়েছে আর্থিক সংকটে। মৃত্যু, শোক আর সংকটের মধ্যে কাটাচ্ছে মানুষ। এ প্রেক্ষাপটে দেশে জীবন ও জীবিকা উভয়ের সুরক্ষার জন্যই টিকা কার্যক্রম জোরদার করা প্রয়োজন।

সংবাদটি শেয়ার করুন।

    No feed items found.