
করোনা ভাইরাস সংক্রমণ প্রতিরোধে সরকারের নির্দেশনা মেনে জনসমাগম এড়িয়ে সচেতন ও সতর্কতার সহিত ঘরে থাকতে খেলার মাঠে গিয়েও তরুণদের বাড়ি ফেরার তাগিদ দিচ্ছেন বিয়ানীবাজার-জকিগঞ্জ সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সুদীপ্ত রায়। কর্তব্যপালন শেষে বাসায় ফিরেই আবার ভাবছেন পৃথিবীর বর্তমান দূর্দিনের কথা। ফিরে যাচ্ছেন নস্টালজিয়ায়। মঙ্গলবার জকিগঞ্জের একটি খেলার মাঠে গিয়ে হ্যান্ডমাইকে ঘোষণা দিয়ে তরুণদের বাড়ি ফিরিয়েছেন তিনি।
বাসায় ফিরে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে লিখেছেন-মাঠে ফুটবল বা ক্রিকেট খেলা দেখলে এখনও হাত পা নিশপিশ করে! ইচ্ছে করে মাঠে নেমে যেতে।ফুটবল নিয়ে ছুটে যেতে বা ব্যাট বলে ছক্কা মারতে! স্মৃতিতে ভেষে ওঠে ছেলেবেলার স্কুল ছুটির পর খেলার মাঠের সহস্র হাতের ডাকে খেয়ে না খেয়ে মাঠে চলে যাওয়া; ছুটির দিনগুলোতে তো কথাই নেই; সারাদিন মাঠেই কেটে যেতো।মায়ের বকুনি, বাবার রক্তচক্ষু উপেক্ষা করেও মাঠে চলে যাওয়ার অদম্য তাড়না আজও ভুলা যায় না!
ছেলেরা মাঠে খেলাধুলা করবে এটা খুব স্বাভাবিক ব্যাপার।আর স্কুল ছুটির দিনে তো এটি আরও রোমাঞ্চের পর্যায়ে চলে যায়। এর মত অম্লান আনন্দ, বিনোদন আর কিছু হতে পারে না! চিত্ত বিনোদন আর শারিরীক গঠনে এর কোন বিকল্পও নেই।
বেরসিকের মত সেই আনন্দ উল্লাস থামাতে গেলে বুকটা হাহাকার করে ওঠে।এখন সময়টাই এরকম।ঘরে থাকা ছাড়া কোন বিকল্প নাই।বাহিরে একত্র হওয়া বা সমাগম করা কোন ভাবেই উচিত নয়।তাই যখন মাঠের পাশে দাঁড়িয়ে খেলাধুলার বিনোদন ব্যাতিরেখে মাইকের জোড়ালো আওয়াজে খেলা বন্ধ করে বাসায় যাওয়ার কথা বলি তখন অজান্তে নিজেরই গলা ধরে আসে।
কিছু করার নেই। কর্তব্য করে যেতে হচ্ছে।পাষানের মত সব বন্ধ করে সবাইকে বাড়িতে পাঠানো হচ্ছে।শুধুমাত্র আক্রান্ত না হওয়ার জন্য, শুধুমাত্র সবাই যাতে সুস্থ থাকে সেই প্রয়াসে। জানি অনেকেই হয়তো অসন্তোষের বশে গালমন্দ করছ; অপছন্দ করছ আমায়!
কিন্তু বিশ্বাস কর তোমাদের এই নির্মল আনন্দে মিশে যেতে আমারও ইচ্ছে করে।ইচ্ছে করে বিকেলের সোনা আলোয় তোমাদের সাথে হারিয়ে যেতে!
এই মাঠ ঘাট আবার তোমাদের আলোয় উদ্ভাসিত হবে, আবার ফিরব আমরা চেনা ছন্দে নতুন উদ্যমে !!
করোনা বিহীন আমাদের নির্মল পৃথিবী ফিরবেই ফিরবে!
সুদীপ্ত রায়
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার,
জকিগঞ্জ সার্কেল, সিলেট।
০৭.০৪.২০২০
সংবাদটি শেয়ার করুন।