সুনামগঞ্জের দিরাই উপজেলার রাজানগর ইউনিয়নভুক্ত কেজাউড়া নামের একটি গ্রামে গত রোববার রাতে এমন একটি ঘটনা ঘটেছে, যা মানবসভ্যতাকে প্রশ্নের মুখে দাঁড় করিয়ে দেয়।
এ গ্রামে তুহিন নামে পাঁচ-ছয় বছরের একটি শিশুকে ঘুম থেকে তুলে নিয়ে এতটাই নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়েছে, যা কল্পনাকেও হার মানায়। শিশুটিকে গলা কেটে হত্যা করে তাদের বাড়ির অদূরে একটি গাছের সঙ্গে ঝুলিয়ে রেখে তার পেটের মধ্যে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত দুটি ছুরি ঢুকিয়ে রাখা হয়।
শুধু তাই নয়, শিশুটির পুরুষাঙ্গ ও কান কেটে ফেলা হয়। এর মধ্যে একটি কান পাওয়া গেছে পাশের সড়কে। এ ঘটনার প্রতিক্রিয়ায় আমরা শুধু একটি কথাই বলতে পারি- ধিক এ বর্বরতা!
এতটুকু একটি শিশুকে কে বা কারা এমন পাশবিকভাবে হত্যা করল সেটাই সবচেয়ে বড় প্রশ্ন।
কারও শত্রু হওয়ার মতো বয়স শিশুটির হয়নি। তবে বড়দের শত্রুতার বলি হতে হয়েছে তাকে, এমনটি ধারণা করা যায়। অবশ্য এ হত্যাকাণ্ডের ব্যাপারে পুলিশ যে ভাষ্য দিয়েছে, তা শিহরিত হওয়ার মতো।
শিশু তুহিনকে এমন নৃশংসভাবে হত্যার ঘটনায় নাকি তার পরিবারের সদস্যদের সম্পৃক্ততা পাওয়া গেছে! তুহিনের বাবা এলাকার একটি হত্যা মামলাসহ কয়েকটি মামলার আসামি।
মামলার কারণে তাদের পরিবারের লোকজন এমন কাজ করে থাকতে পারে বলে জানিয়েছে পুলিশ। এ তথ্য যদি সত্য হয়, তাহলে তা আরও চিন্তার বিষয় বৈকি।
প্রশ্ন জাগে, কোথায় গেছে মানুষের বিবেক ও মূল্যবোধ! মনুষ্যত্ব হারালে মানুষের আর থাকে কী! মানুষ কি মানুষকে এভাবে মারতে পারে? তাও নিজ পরিবারের শিশুকে? তারপরও আমরা বলব, ঘটনাটির আরও তদন্ত হোক। প্রকৃত অপরাধীকে চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনা হোক।
দেশে শিশু হত্যা, ধর্ষণ আর অপহরণের ঘটনা ক্রমাগত বাড়ছে। অতি তুচ্ছ ঘটনা থেকে শুরু করে নানা কারণে অসহায় শিশুরা যেভাবে ঘাতকদের লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হচ্ছে, তা সত্যিই উদ্বেগজনক। সংঘবদ্ধ অপহরণকারী চক্র, প্রতারক, প্রবঞ্চক, দুর্বৃত্ত দল, এমনকি গর্ভধারিণী মায়ের হাতেও নিষ্পাপ-নিরপরাধ শিশুরা আর নিরাপদ নয়।
কেন ঘটছে এসব ঘটনা, এ প্রশ্ন এখন ঘুরপাক খাচ্ছে সমাজের সর্বত্র। তবে কি দেশের জনগোষ্ঠীর একটি অংশ বিকারগ্রস্ত হয়ে পড়েছে? অনেকে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির কথা বলেন, বিচারহীনতার সংস্কৃতিই অপরাধ বৃদ্ধির কারণ বলে থাকেন অনেকে। আসলেই কি শুধু দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি পারে এ ধরনের অপরাধ দূর করতে?
বস্তুত সমাজটা এখন এমন জায়গায় চলে গেছে, যেখানে শুধু বিচারব্যবস্থা কোনো কাজে আসবে না। পুরো বিষয়টি এক বড় গবেষণার বিষয়বস্তুতে পরিণত হয়েছে।
এখন দরকার সমাজতত্ত্ববিদ, মনোবিজ্ঞানীসহ বিশেষজ্ঞদের সুচিন্তিত গবেষণা, যা মানুষের অপরাধপ্রবণতার কারণগুলো উদ্ঘাটন করে প্রতিকার-ব্যবস্থার সুপারিশ করতে পারবে। আমাদের কথা হল, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে অপরাধপ্রবণদের বিরুদ্ধে সক্রিয় হতে হবে অবশ্যই। তবে যেসব অপরাধ শুধু আইনের যথাযথ প্রয়োগ দ্বারা প্রতিরোধ করা যায় না, সেসবের প্রতিকার করতে হবে সামাজিক ও পারিবারিকভাবে। এ দিকটিতে দৃষ্টি দিতে হবে সবাইকেই।
<p style="text-align: center;">সম্পাদক মন্ডলীর সভাপতিঃ মোহাম্মদ আফছার খান সাদেক</p> <p style="text-align: center;">সম্পাদক ও প্রকাশকঃ মিলাদ মোঃ জয়নুল ইসলাম</p> <p style="text-align: center;">প্রকাশনালয়ঃ রিপোর্টার লজ, কসবা, বিয়ানীবাজার, সিলেট ।</p> <p><hr></p> <p style="text-align: center;"><span class="x193iq5w xeuugli x13faqbe x1vvkbs x1xmvt09 x1lliihq x1s928wv xhkezso x1gmr53x x1cpjm7i x1fgarty x1943h6x xtoi2st xw06pyt x1603h9y x1u7k74 x1xlr1w8 xzsf02u x1yc453h" dir="auto"><span class="x1lliihq x6ikm8r x10wlt62 x1n2onr6 x1120s5i">বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ</span></span> উত্তর বাজার কেন্দ্রিয় মসজিদ মার্কেট (২য় তলা), বিয়ানীবাজার, সিলেট । <br>মোবাঃ ০১৮১৯-৬৫৬০৭৭, ০১৭৩৮-১১ ৬৫ ১২ ইমেইলঃagamiprojonma@gmail.com</p>
Copyright © 2025 Agami Projonmo. All rights reserved.