সম্পাদকীয়:
তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাসের (এলএনজি) ওপর অতিরিক্ত নির্ভরশীল হওয়া কতটা বিপজ্জনক তা বহুল আলোচিত। গত ৫ বছরে দেশে শুধু এলএনজি আমদানিতে ব্যয় হয়েছে ৮৫ হাজার ৬৬৭ কোটি টাকা। যদিও এ সময়ে দেশের পুরো গ্যাস ক্রয় বাবদ ব্যয় হয়েছে ১ লাখ ১০ হাজার ৭০০ কোটি টাকা। মোট গ্যাসের ২৪ শতাংশ পাওয়া গেছে এলএনজি থেকে। অথচ ব্যয় করতে হয়েছে ৭৭ দশমিক ৩৮ শতাংশ গ্যাসের সমান দাম। আগামী দিনে আরও তিনগুণ এলএনজি আমদানি বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। ২০২৬ সালের পর এলএনজি আমদানি ১০.৫০ মিলিয়ন টন পার ইয়ার (এমটিপিএ) ছাড়ানোর ব্যবস্থা চূড়ান্ত করা হয়েছে। এ আমদানির জন্য প্রথমবারের মতো আইটিএফসি থেকে ১০০ মিলিয়ন ডলার ঋণ নেওয়ার চুক্তি হয়েছে। যেহেতু এলএনজির ওপর অতিরিক্ত নির্ভরশীল হওয়া বিপজ্জনক, সেহেতু এলএনজি আমদানি বাড়ানোর সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে কর্তৃপক্ষকে দূরদর্শিতার পরিচয় দিতে হবে।
দেশে গ্যাস সরবরাহের বেশিরভাগই আসে স্থানীয়ভাবে উত্তোলনের মাধ্যমে। এর মধ্যে শেভরন উত্তোলন করছে মোট গ্যাসের ৫০ শতাংশ, আর স্থানীয় কোম্পানিগুলো থেকে পাওয়া যাচ্ছে ২৬ শতাংশ। শেভরনের গ্যাস ক্রয়ে বছরে ব্যয় ১৭ দশমিক ৩৫ শতাংশ অর্থ; স্থানীয় কোম্পানিগুলোর পেছনে বছরে ব্যয় হয় ৫ শতাংশের কিছু বেশি। এ অবস্থায় ব্যয়বহুল এলএনজি নিয়ে অতিরিক্ত তৎপরতা কতটা বাস্তবসম্মত তা আরও গভীরভাবে ভাবতে হবে। ইতোমধ্যে কাতার এনার্জি কোম্পানি থেকে প্রতিবছর অতিরিক্ত ২৪ কার্গো এলএনজি আমদানির চুক্তি করা হয়েছে। আগামী ১৫ বছর এ কোম্পানি থেকে এলএনজি কিনবে সরকার। এছাড়া ওকিউ ট্রেডিং লিমিটেড থেকেও আগামী ১০ বছর মেয়াদি প্রতিবছর দেড় এমটিপিএ গ্যাস বাড়ানোর চুক্তি করা হয়েছে। এ চুক্তির আওতায় ২০২৬ সালে প্রথম বছরে চারটি এলএনজি কার্গো, ২০২৭ ও ২০২৮ সালে প্রতিবছর ১৬টি এলএনজি কার্গো এবং ২০২৯ থেকে ২০৩৫ সাল পর্যন্ত প্রতিবছর ২৪টি কার্গো সরবরাহ করবে।
বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, এলএনজি আমদানি করতে গিয়ে বিপুল পরিমাণ অর্থ ব্যয় করছে জ্বালানি বিভাগ; নতুন করে আরও বিপুল অর্থ ব্যয়ের পরিকল্পনা চূড়ান্ত করা হয়েছে। এতে আর্থিক ঝুঁকিতে পড়েছে জ্বালানি খাত। তারা বলেন, গত কয়েক দশকে স্থানীয় গ্যাস উত্তোলন ও অনুসন্ধানে পর্যাপ্ত বিনিয়োগ করা হলে এলএনজির ওপর এতটা নির্ভর করতে হতো না। এ অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে স্থানীয় গ্যাস উত্তোলন ও অনুসন্ধানে বিনিয়োগ বাড়াতে হবে। বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, যে পরিমাণ অর্থ আমদানিতে ব্যয় করার পরিকল্পনা করা হয়েছে, তা দেশে বিনিয়োগ করা হলে দুই বছরের মধ্যে আমদানিনির্ভরতা কমিয়ে আনা সম্ভব। তারা বলেন, এলএনজি-নির্ভরতা কাটিয়ে ওঠা না গেলে সামনের দিনগুলোয় বিপদ আরও বাড়তে পারে।
এলএনজি আমদানির পাশাপাশি সরকার দেশীয় উৎস থেকে গ্যাস উত্তোলনের নানা পরিকল্পনা চূড়ান্ত করেছে। এর মধ্যে ২০২৫ সালের মধ্যে মোট ৪৬টি কূপ খনন, উন্নয়ন ও ওয়ার্কওভার সম্পন্ন করা হবে। এজন্য সময়ভিত্তিক কর্মপরিকল্পনা প্রণয়ন ও ডিপিপি প্রণয়ন নিশ্চিত করা হয়েছে। এ বিষয়ে মনিটরিং ও নির্দিষ্ট সময় পরপর সমন্বয় সভা হচ্ছে। ইতোমধ্যে ৯টি কূপ খনন, উন্নয়ন ও ওয়ার্কওভার সম্পন্ন হয়েছে। বিশ্বের যে কোনো দেশের কোম্পানির তুলনায় বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম এক্সপ্লোরেশন অ্যান্ড প্রোডাকশন কোম্পানি লিমিটেডের (বাপেক্স) গড় সাফল্য বেশি। বাপেক্সের সক্ষমতা বাড়ানোর পদক্ষেপ নেওয়া দরকার। আমাদের প্রত্যাশা, আগামীতেও প্রতিষ্ঠানটি সাফল্যের ধারা অব্যাহত রাখতে সক্ষম হবে।
<p style="text-align: center;">সম্পাদক মন্ডলীর সভাপতিঃ মোহাম্মদ আফছার খান সাদেক</p> <p style="text-align: center;">সম্পাদক ও প্রকাশকঃ মিলাদ মোঃ জয়নুল ইসলাম</p> <p style="text-align: center;">প্রকাশনালয়ঃ রিপোর্টার লজ, কসবা, বিয়ানীবাজার, সিলেট ।</p> <p><hr></p> <p style="text-align: center;"><span class="x193iq5w xeuugli x13faqbe x1vvkbs x1xmvt09 x1lliihq x1s928wv xhkezso x1gmr53x x1cpjm7i x1fgarty x1943h6x xtoi2st xw06pyt x1603h9y x1u7k74 x1xlr1w8 xzsf02u x1yc453h" dir="auto"><span class="x1lliihq x6ikm8r x10wlt62 x1n2onr6 x1120s5i">বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ</span></span> উত্তর বাজার কেন্দ্রিয় মসজিদ মার্কেট (২য় তলা), বিয়ানীবাজার, সিলেট । <br>মোবাঃ ০১৮১৯-৬৫৬০৭৭, ০১৭৩৮-১১ ৬৫ ১২ ইমেইলঃagamiprojonma@gmail.com</p>
Copyright © 2025 Agami Projonmo. All rights reserved.