প্রকাশনার ১৫ বছর

রেজি নং: চ/৫৭৫

১লা জুলাই, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
১৭ই আষাঢ়, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
৬ই মহর্‌রম, ১৪৪৭ হিজরি

অঝোরে কাঁদলেন অভিনেত্রী মেহজাবীন

admin
প্রকাশিত মে ১৩, ২০২৪, ০৬:২৫ অপরাহ্ণ
অঝোরে কাঁদলেন অভিনেত্রী মেহজাবীন

 

বিনোদন ডেস্ক:

রোববার (১২ মে) ছিল বিশ্ব মা দিবস। বিশেষ এই দিনে সন্তানদের কৃতিত্বের জন্য শোবিজ ও বিভিন্ন অঙ্গনের ১১ রত্নগর্ভাকে ‘গরবিনী মা’ সম্মাননা প্রদান করেছে ইউনিভার্সেল মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল।

এদিন দুপুরে রাজধানীর মহাখালীতে রাওয়া কনভেনশন সেন্টারে ইউনিভার্সেল মেডিকেল কলেজ (ইউএমসি) হাসপাতাল আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে তাদের হাতে পুরস্কার তুলে দেন মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক।

দীর্ঘ ১৪ বছরের ক্যারিয়ারে শোবিজ অঙ্গনে কৃতিত্বের সঙ্গে অবদান রাখায় অভিনেত্রী মেহজাবীন চৌধুরীকে ধন্যবাদ জানানোর পাশাপাশি সন্তানের কৃতিত্বস্বরূপ তার মা গাজালা চৌধুরীকে এই আয়োজনে পুরস্কৃত করা হয়।

 

এসময় নিজের মাকে সম্মানীত হতে দেখে আবেগে অশ্রুসিক্ত হয়ে পড়েন অভিনেত্রী। একটা সময়ে অঝোরে কাঁদতে থাকেন তিনি। এরপর মাকে নিয়ে স্মৃতিচারণ করে কিছু কথা বলেন মেহজাবীন।

এই অভিনেত্রী বলেন, ‘নিজের কাজের জন্য মাকে সম্মানীত হতে দেখার আনন্দটা ভাষায় প্রকাশ করার মতো না। আমার মনে হয়, প্রত্যেকটা সন্তানই যখন তার মা সম্পর্কে কথা বলতে যায় তখন সবার চোখেই পানি চলে আসে। আজকে আমার যে অবস্থান তার পেছনে আমার মায়ের অবদান অনেক। আমাকে এখানে আসতে সহযোগিতা করতে গিয়ে মা যে কতটা ত্যাগ করেছেন সেটা হয়তো আমি এখানে বলতে পারব না! সেই ত্যাগের কথা বলে তাকে ছোট করতে চাই না এই মঞ্চে।’

 

ক্যারিয়ারের শুরুর দিকের সময়ের কথা স্মরণ করে মেহজাবীন বলেন, ‘বাবার চাকরির সুবাদে দেশের বাইরে আমার বেড়ে ওঠা। এরপর যখন দেশে আসি তখন আমি অনেক ছোট। আমরা চট্টগ্রামে থাকতাম। ২০০৯ সালের দিকে লাক্স চ্যানেল আই সুপারস্টার প্রতিযোগিতা দেখে এতে অংশগ্রহণ করার ইচ্ছে জাগে আমার। এরপর আমি লুকিয়ে সেখানে অংশগ্রহণ করি এবং মাকে জানাই, আমি এখানে সুযোগ পেয়েছি। এরপর মায়ের কাছে সামনে এগিয়ে যাওয়ার সুযোগ চাই। সে সম্মতি দেয়। ট্রেনিংয়ের জন্য চট্টগ্রাম থেকে মা এবং আমার সাড়ে তিন বছরের ছোট ভাইকে নিয়ে ঢাকায় আসি। তখন ঢাকায় সেভাবে থাকার জায়গা ছিল না, আত্মীয় থাকলেও তাদেরকে জানাতে মাকে নিষেধ করি। কারণ যদি প্রতিযোগিতায় যদি হেরে যাই তাহলে সেটা খুবই লজ্জাজনক হবে। এরপর মা আর ছোট ভাইকে নিয়ে হোটেলে উঠি। সেখান থেকে ক্যাম্পিং করতাম আর প্রতিদিন মায়ের বিষণ্ণ মুখটা দেখতাম, আমার জন্য মা কতটা কষ্ট করেছেন।’

 

এই লাক্স তারকা আরও বলেন, ‘আমি যখন সেরা ২৫-এ সিলেক্ট হই তখন ভেবেছিলাম মা খুশি হয়ে আমাকে জড়িয়ে ধরবেন কিন্তু মা তখন শুধু বলেছিলেন, ওহ আচ্ছা, ভালো। সেদিন আমরা আবার ঢাকা থেকে বাসে করে চট্টগ্রাম যাই। সেই সময়ে আমার মা ছোট ভাইকে কোলে নিয়ে জানালায় মাথা হেলান দিয়ে বাহিরে দেখছিলেন। সেই মুহূর্তটা আমাকে এতটা কষ্ট দিয়েছিল যেটা আমি বলে বুঝাতে পারব না। সেই সময় আমি প্রতিজ্ঞা করেছি যে, শুধু এই প্রতিযোগিতা-ই বিজয়ী নয়, সব কিছুতে সাকসেসফুল হবো এবং আমার মায়ের সব কষ্ট দূর করে দিব।’

বর্তমানে মায়ের যেকোনো স্বপ্নই পূরণ করতে পারেন মেহজাবীন। ভাবতে হয় না মায়ের চিকিৎসা নিয়েও। অভিনেত্রীর ভাষায়, ‘আজকে হয়তো আমি সাকসেসফুল কিন্ত কতটা সাকসেসফুল জানি না কিন্তু আজকে আমার মা যদি কোন একটা জিনিসে হাত রাখে তাহলে আমি সেটা তাকে অনায়াসেই দিতে পারি, কোনো কিছু চাইলে সেটা এনে দিতে পারি। আজকে আমার মাকে কোনোকিছু নিয়ে ভাবতে হয় না, তার চিকিৎসা নিয়ে ভাবতে হয় না। মায়ের কষ্টের কিংবা ত্যাগের প্রতিদান কোনো সন্তানই দিতে পারে না, আমিও হয়তো পারব না কিন্তু মায়ের জন্য কিছু করতে পারছি এবং আজকে আমার মা যে এই সম্মাননা পেল এটা দেখে খুবই আনন্দিত বোধ করছি। শুধু আমার মা নয়, এখানে যারা রয়েছেন প্রত্যেক মাকে অনেক ধন্যবাদ এবং ভালোবাসা।’

ইউনিভার্সেল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চেয়ারম্যান ও এফবিসিসিআইয়ের পরিচালক প্রীতি চক্রবর্তীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও গরবিনী মা সম্মাননার প্রধান উদ্যোক্তা ডা. আশীষ কুমার চক্রবর্তী। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন চলচ্চিত্র অভিনেতা ও ঢাকা-১০ আসনের সংসদ সদস্য ফেরদৌস আহমেদ ও সংরক্ষিত নারী আসনের সংসদ সদস্য আরমা দত্ত।

সংবাদটি শেয়ার করুন।

    No feed items found.